মুক্তিযুদ্ধ স্বাধীনতা ও মানবিক মূল্যবোধ রচনা উত্তর: মুক্তিযুদ্ধ স্বাধীনতা ও মানবিক মূল্যবোধ একটি অপরটির সাথে জড়িত। আমরা প্রায় 30 লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে স্বাধীনতা অর্জন করেছি। সুতরাং ত্যাগ-তিতিক্ষার মাধ্যমে একটি যুদ্ধে জয় লাভ করা সম্ভব হয়। বাংলাদেশ পৃথিবীর ইতিহাসে একটি দেশ যারা নিজেদের অধিকার আদায় করতে যুদ্ধ করেছে। তাই আজকে আমরা যে রচনা সম্পর্কে জানব তা হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধ স্বাধীনতা ও মানবিক মূল্যবোধ রচনা ১৫০০ শব্দের।

ভূমিকা: মুক্তিযুদ্ধ অর্থ হচ্ছে মুক্তির জন্য যে যুদ্ধ। অর্থাৎ শাসকগোষ্ঠী থেকে মুক্ত হওয়ার যুদ্ধ। এর ফলে একটি জাতি প্রকৃত স্বাধীনতা অর্জন করে। মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা এবং মানবিক মূল্যবোধ একটি অপরটির পরিপূরক। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ ইতিহাসে অমূল্য সম্পদ। কোন দেশ তাদের স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ করেনি। পৃথিবীর মানচিত্রে একমাত্র বাংলাদেশ সেই গৌরবের কাজ করেছে। তাই বাঙালি জাতির কাছে মুক্তিযুদ্ধ এবং স্বাধীনতা অর্থবহ। মুক্তিযুদ্ধের মূল কথা হচ্ছে স্বাধীনতা। অপরদিকে মানবিক মূল্যবোধের কারণে মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা প্রকৃত রূপ লাভ করে।
স্বাধীনতা যুদ্ধ: বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ হচ্ছে, 1971 সালে তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানের বিরুদ্ধে পূর্ব পাকিস্তানে সংঘটিত একটি বিপ্লব ও সশস্ত্র সংগ্রাম। পূর্ব পাকিস্তানের বাঙালি জাতীয়তাবাদের উত্থান এবং স্বাধীনতা আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় এই যুদ্ধ সংঘটিত হয়। যুদ্ধের ফলে স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ রাষ্ট্রের অভ্যুদয় ঘটে। পশ্চিম পাকিস্তান কেন্দ্রিক সামরিক সরকার 1971 সালের 25 মার্চ রাতে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের উপরে অপারেশন সার্চলাইট পরিচালনা করে। এর ফলে তারা সাধারণ বাঙালি নাগরিক, ছাত্র, শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী এবং সরকারি কর্মকর্তাদের হত্যা করে। এই রাতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গ্রেফতার করা হয়। তবে গ্রেপ্তার হওয়ার আগে তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন। স্বাধীনতার ঘোষণা পাওয়ার পর পর বাংলার জনগন নতুন করে অনুপ্রেরণা পায়। ফলে তারা যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হয়। এরপর সংগঠিত হয় প্রায় দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ। নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর 1971 সালের 16 ই ডিসেম্বর পশ্চিম পাকিস্তানী বাহিনী আমাদের কাছে আত্মসমর্পণ করেন। এর ফলে অভ্যুদয় ঘটে স্বাধীন রাষ্ট্রের। সেই স্বাধীন রাষ্ট্রের নাম হচ্ছে বাংলাদেশ।
আপনার পড়ছেন, মুক্তিযুদ্ধ স্বাধীনতা ও মানবিক মূল্যবোধ রচনা ১৫০০ শব্দের। এর পাশাপাশি আপনারা আরো যে ধরনের রচনা পড়তে পারেন তা হলো:
প্রেক্ষাপট: একটি দেশের মুক্তিযুদ্ধ একটি বিষয়কে কেন্দ্র করে ঘটে না। বরং বিভিন্ন কারণে যখন একটি জাতি শোষণ নিপীড়িত হতে থাকে, তখন তারা প্রতিরোধ গড়ে তোলে। তেমনি বাংলাদেশের সাধারণ জনগণ যখন শোষণ এবং নিপীড়িত হতে থাকে তখন তারা সংগ্রাম শুরু করে। তারা তাদের অধিকার আদায়ের জন্য সঙ্ঘবদ্ধ হয়। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ শুধুমাত্র একটি বিষয়কে কেন্দ্র করে পরিচালিত হয় নি। পশ্চিম পাকিস্তান কর্তৃক পূর্ব পাকিস্তানের উপর ছিল নানা রকম বর্বরতা। আমরা অনেকাংশে ছিলাম তাদের থেকে পিছিয়ে। তবে স্বাধীনতা যুদ্ধের বীজ বপন হয় মূলত ভাষা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে। এছাড়া অর্থনৈতিক, সামাজিক, রাজনৈতিক ইত্যাদি ক্ষেত্রে আমরা ছিলাম পিছিয়ে। পশ্চিম পাকিস্তানিদের সাথে আমাদের ছিল আদর্শিক এবং সাংস্কৃতিক পার্থক্য। ছিল রাজনৈতিক পার্থক্য। এছাড়া 1970 সালের নির্বাচন, ইয়াহিয়া-মুজিব বৈঠক, অপারেশন সার্চলাইট ইত্যাদি কারণে স্বাধীনতা যুদ্ধের গতি আরো বেড়ে যায়।
ভাষা আন্দোলন: তৎকালীন পাকিস্তান ছিল পশ্চিম পাকিস্তান এবং পূর্ব পাকিস্তানে বিভক্ত। ঐতিহাসিকভাবে উর্দ ু শুধুমাত্র ভারতীয় উপমহাদেশের উত্তর-মধ্য ও পশ্চিম অঞ্চলের বিদ্যমান ছিল। অন্যদিকে উপমহাদেশের পূর্ব অংশের মানুষের প্রধান ভাষা ছিল বাংলা। পাকিস্তানের মোট 56 শতাংশ মানুষের মুখের ভাষা ছিল বাংলা। পাকিস্তান জন্মের পর থেকে বাংলা ভাষার উপর বিভিন্ন বৈষম্য চলতে থাকে। ব্রিটিশ ভারতের সময় থেকে মুদ্রা ও ডাকটিকিটে বাংলা লেখা থাকলেও, পাকিস্তানি মুদ্রায় বাংলা লেখা ছিল না। এর ফলে বাঙালিরা প্রতিবাদ জানায়। ফলে 1948 সালে বাংলা ভাষা আন্দোলনের সূচনা ঘটে। চূড়ান্ত পর্যায়ে 1952 সালে একুশে ফেব্রুয়ারি তীব্র আন্দোলনে রূপ নেয়। আন্দোলনে মৃত্যুবরণ করে রফিক সালাম জব্বার সহ আরো অনেকে। ভাষা আন্দোলন মূলত মুক্তিযুদ্ধের বীজ বপন করে।
অর্থনৈতিক বৈষম্য: পাকিস্তান সৃষ্টির পূর্ব থেকেই পূর্ববাংলা অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে ছিল। তবে পাকিস্তান সৃষ্টির পর তা আরো বৃদ্ধি পায়। কেন্দ্রীয় সরকারের ইচ্ছাকৃত রাষ্ট্রীয় বৈষম্য শুধুমাত্র এর পেছনে দায়ী ছিল না। পশ্চিম অংশে দেশের রাজধানী, বিভিন্ন প্রকল্প ইত্যাদি প্রাধান্য পাচ্ছিল। 1948 থেকে 1960 সালের মধ্যে পাকিস্তানের মোট রপ্তানি আয়ের 70% পূর্ব পাকিস্তানে রপ্তানি থেকে এসেছিল। তারপরেও পূর্ব-পাকিস্তান উক্ত অর্থের মাত্র 25 পার্সেন্ট বরাদ্দ পেয়েছিল। এ সময় পূর্ব পাকিস্তানে শিল্পপ্রতিষ্ঠান কমতে শুরু করে এবং পশ্চিম পাকিস্তানের স্থানান্তরিত হতে থাকে। 1948 সালে পূর্ব পাকিস্তানে ছিল নয়টি পোশাক কারখানা। 1971 সালে পশ্চিম পাকিস্তানের পোশাক কারখানার সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় 150 .সেখানে পূর্ব অংশের কারখানার সংখ্যা ছিল মাত্র 26 টি। ই সময়ে প্রায় ২৬ কোটি ডলার মূল্যমানের সম্পদ পূর্ব পাকিস্তান থেকে পশ্চিম পাকিস্তানে পাচার হয়ে যায়।
আপনার পড়ছেন, মুক্তিযুদ্ধ স্বাধীনতা ও মানবিক মূল্যবোধ রচনা ১২০০ শব্দের উওর। এর পাশাপাশি আপনারা আরো যে ধরনের রচনা পড়তে পারেন তা হলো:
ডিজিটাল বাংলাদেশ রচনা – ডিজিটাল বাংলাদেশ
তরুণ প্রজন্ম: শিক্ষিত বেকার, সম্ভাবনা এবং সমস্যা
সামরিক ক্ষেত্রে বৈষম্য: পাকিস্তানের সেনাবাহিনীতেও পূর্ব পাকিস্তানের সংখ্যা ছিল খুবই অল্প। 1965 খ্রিস্টাব্দে সশস্ত্র বাহিনীর বিভিন্ন শাখায় বাঙালি অফিসার ছিলেন মাত্র 5%. এর মধ্যে কয়েকজন ছিল মাত্র কমান্ডে, বাকিরা ছিলেন কারিগারি কিংবা প্রশাসনিক পদে। পশ্চিম পাকিস্তানীরা বাঙ্গালীদের তৃতীয় শ্রেণীর নাগরিক মনে করত। তারা ভাবতেও পাঞ্জাবি বা পাঠানোর মত বাঙ্গালীদের লড়াই করার ক্ষমতা নেই। এছাড়াও বিভিন্ন চাকরির সুযোগ পাচ্ছিল না বাঙালিরা।
আদর্শিক ও সাংস্কৃতিক পার্থক্য: বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ এর পেছনে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রয়েছে আদর্শিক ও সাংস্কৃতিক পার্থক্য এ। 1947 সালে ভারত বিভক্তির সময় পূর্ব বাংলার মুসলিম জনগণ পাকিস্তানের ইসলামী ভাবমূর্তির সাথে একাত্মতা অনুভব করে। কিন্তু পাকিস্তান সৃষ্টির পর পূর্ব বাংলার জনগণ ক্রমান্বয়ে দ্বিজাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে পাকিস্তান রাষ্ট্র গঠনের মূলনীতি গুলো কে সম্প্রীতি বজায় রাখার ক্ষেত্রে সাংঘর্ষিক অনুভব করতে থাকে। বাঙালিরা ধর্মনিরপেক্ষতা, গণতন্ত্র ও সমাজতন্ত্র প্রভৃতি পাশ্চাত্য মন্ত্রিসভার ন্যায় একটি সমাজ কামনা করতে থাকে। অনেক বাঙালি মুসলমান পাকিস্তানের চাপিয়ে দেওয়া ইসলামী ভাবমূর্তির বিরুদ্ধে তীব্র আপত্তি জানায়। পশ্চিম পাকিস্তান পূর্ব পাকিস্তানিদের তুলনায় পাকিস্তানের ইসলামি রাষ্ট্রব্যবস্থার প্রতি অধিক আস্থাশীল ছিলেন। ১৯৭১ সালের পরও তাদের সেই আস্থা অক্ষুণ্ণ থাকে। তবে পূর্ব পাকিস্তান ও পশ্চিম পাকিস্তান এর মধ্যে সাংস্কৃতিক ও ভাষাগত পার্থক্য ধর্মীয় গুরুত্বকে ছাপিয়ে যায়। বাঙালিরা তাদের ভাষা, সংস্কৃতি, বর্ণমালা, শব্দ সম্ভার নিয়ে গর্ব করতো। এ কারণেই 1952 সালে ভাষা আন্দোলন হয়। তবে এর পরবর্তীতেও ভাষা এবং সংস্কৃতিতে আমাদের অবহেলা করা হতো। ধর্মনিরপেক্ষতার প্রতি গুরুত্ব আরোপ করে আওয়ামী লীগকে মুসলিম থেকে পৃথক করে দেয়। 1971 সালে ধর্মনিরপেক্ষ নেতারাই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রাম কে পরিচালনা করে। মোটকথা পাকিস্তানিরা পূর্ব পাকিস্তানের সংস্কৃতি এবং ভাষাকে মেনে নিতে পারেনি। এর ফলে বাঙালিরা তাদের সাথে ঐক্য বজায় রাখতে পারেনি।
1970 এর নির্বাচন: 1970 সালে পাকিস্তানের প্রথম সাধারণ নির্বাচনে শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে। তবে পাকিস্তানের রাজনৈতিক পরিস্থিতি চূড়ান্ত নাটকীয়তা লাভ করে। এ সময় আওয়ামী লীগ ১৬৯ টি আসনের মধ্যে ১৬৭ টি আসনে বিজয়ী হয়। তবে নির্বাচনে ২য় সংখ্যাগরিষ্ঠ দল পাকিস্তান পিপলস পার্টির নেতা জুলফিকার আলী ভুট্টো শেখ মুজিবের প্রধানমন্ত্রী হওয়ায় বিরোধিতা করে। এর বদলে দুই অংশে দুইজন প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাব করেন।
অপারেশন সার্চলাইট: যখন কোনভাবে পশ্চিম পাকিস্তান পূর্ব পাকিস্তানের দমিয়ে রাখতে পারছিল না, তখন বাঙালি জাতীয়তাবাদী স্বাধিকার আন্দোলন কে অবদমিত করতে পাকিস্তান সেনাবাহিনী 1971 সালের 25 মার্চ রাতে ঢাকায় গণহত্যা শুরু করে। তারা রাতের অন্ধকারে ঘুমন্ত বাঙালিদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। সরকারি কর্মচারী, শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী সহ বিভিন্ন মানুষকে তারা হত্যা করে। এই নিয়ম তান্ত্রিক গণহত্যা বাঙ্গালীদের আরো ক্ষুব্দ করে এবং শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশের স্বাধীনতার পথ প্রশস্ত করে। বাংলাদেশের গণমাধ্যমে প্রকাশিত গ্রন্থাবলী ঢাকায় গণহত্যা নিহতের সংখ্যা 5000 থেকে 35000 এবং সারাদেশে নিহতের সংখ্যা প্রায় 200000 থেকে 3000000 বলে উল্লেখ করা হয়।
এশিয়া টাইমসের ভাষ্য অনুযায়ী,
সামরিক বাহিনীর বড় বড় কর্মকর্তাদের নিয়ে বৈঠকে ইয়াহিয়া খান বলেন, “৩০ বাঙালি হত্যা করো, তখন দেখবে বাকিরা আমাদের হাত চেটে খাবে।” সেই পরিকল্পনা মতোই ২৫শে মার্চ রাতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী অপারেশন সার্চলাইট পরিচালনা করে, যার উদ্দেশ্য ছিল বাঙালিদের প্রতিরোধ অবদমিত করা। এর অংশ হিসেবেই সামরিক বাহিনীর বাঙালি সদস্যদের নিরস্ত্র করে হত্যা করা হয়, ছাত্র ও বুদ্ধিজীবীদের নিধন করা হয় এবং সমগ্র বাংলাদেশে পুরুষদের তুলে নিয়ে যাওয়া হয় ও গুলি করে হত্যা করা হয়।
1971 সালের 26 মার্চ প্রথম প্রহরে প্রচারিত এক বেতার ভাষণে শেখ মুজিবুর রহমান আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীনতার ঘোষণা করেন। শেখ মুজিবুর রহমান গ্রেফতার হওয়ার পূর্বেই ভাষণের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। তিনি বাংলার জনগণকে সংঘবদ্ধ হওয়ার পরামর্শ প্রদান করে। স্বাধীনতার ঘোষণাটি ছিল:
ইহাই হয়তো আমার শেষ বার্তা, আজ হইতে বাংলাদেশ স্বাধীন। আমি বাংলাদেশের জনগণকে আহ্বান জানাইতেছি, যে যেখানে আছ, যাহার যা কিছু আছে, তাই নিয়ে রুখে দাঁড়াও, সর্বশক্তি দিয়ে হানাদার বাহিনীকে প্রতিরোধ করো। পাকিস্তানী বাহিনীর শেষ সৈন্যটিকে বাংলার মাটি হইতে বিতাড়িত না করা পর্যন্ত এবং চূড়ান্ত বিজয় অর্জন না করা পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাও।”
স্বাধীনতা যুদ্ধ: এর পরবর্তীতে শুরু হয় সশস্ত্র সংগ্রাম যা স্বাধীনতা বা মুক্তিযুদ্ধ নামে পরিচিত। মুক্তিযুদ্ধে নারী-পুরুষ, শিক্ষক, সরকারি কর্মচারী, কৃষক, শ্রমিক, মজুর সবাই অংশগ্রহণ করে। তাদের মনে একটাই আশা ছিল তা হচ্ছে পাকিস্তান শাসকগোষ্ঠী থেকে এই দেশকে মুক্ত করা। নতুন করে স্বপ্ন দেখা। নতুন করে বাঁচার। তাই তারা নিজেদের প্রাণের মায়া ত্যাগ করে দেশের মায়াকে কে আপন করেছে। এই যুদ্ধে পাকিস্তান বাহিনী নির্মমভাবে বাঙ্গালীদের হত্যা করতে থাকে। তবে বাঙালিরা ঘুমিয়ে যাওয়ার নয়। তারা জেগে ওঠে বারবার। শেষ পর্যন্ত বাঙালিদের কাছে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী আত্মসমর্পণ করে। 1971 সালের 16 ই ডিসেম্বর তারা আত্মসমর্পণ করে। প্রায় 93000 যুদ্ধবন্দী যৌথবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করেন। এর মাধ্যমেই আমরা পাই স্বাধীনতা। পৃথিবীর মানচিত্রে নতুন একটি মানচিত্র যোগ হয়। তা হচ্ছে বাংলা। আমরা পাই সার্বভৌমত্ব। প্রতিষ্ঠিত হয় একটি রাষ্ট্র।
মুক্তিযুদ্ধ স্বাধীনতা ও মানবিক মূল্যবোধ: আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সাথে মানবিক মূল্যবোধ ওতপ্রোতভাবে জড়িত। এই দেশে যুদ্ধ হয় মূলত দেশের অখন্ডতা রক্ষার জন্য। যুদ্ধে নিজেদের সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্য রক্ষা করার জন্য সবাই প্রাণপণ লড়ে যায়। শুধুমাত্র যারা যুদ্ধের জন্য প্রশিক্ষণ নিয়েছিল তারাই যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেনি। বরং মানবিক মূল্যবোধ এবং দেশের প্রতি ভালোবাসার কারণে কৃষক, মজুর, ছাত্র, সরকারি কর্মজীবী সবাই বিভিন্নভাবে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছে। মানবিক মূল্যবোধ থেকে বিভিন্ন দেশ আমাদের সাহায্য করেছে। আমাদের পক্ষে কথা বলেছেন। অনেকে আমাদের দেশের পক্ষে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে তথ্য তুলে ধরেছে। একটি যুদ্ধ সাধারণত শুধুমাত্র শক্তির জোরে জয় লাভ করা সম্ভব হয় না। সেখানে মানবিক মূল্যবোধ খুবই প্রয়োজনীয়। আর আমাদের দেশের মানুষ মানবিক মূল্যবোধ এর মাধ্যমেই পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করেছেন। তাদের প্রধান লক্ষ্য ছিল এই দেশের মানুষের অধিকার রক্ষা করা। তাই বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সাথে মানবিক মূল্যবোধ ওতপ্রোতভাবে জড়িত।
উপসংহার: বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ বাঙালি জাতির কাছে গর্বের এবং ঐতিহ্যের। মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা এবং মানবিক মূল্যবোধ একটি যুদ্ধের জন্য প্রধান শক্তি। মানবিক মূল্যবোধ এর শক্তি বলে আমরা যুদ্ধে জয়লাভ করেছি। এখন আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে দেশকে কিভাবে এগিয়ে নেওয়া যায়। দেশের প্রতিটি নাগরিকের মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে ধারণা থাকা প্রয়োজন।
আশা করি আপনারা সবাই মুক্তিযুদ্ধ স্বাধীনতা ও মানবিক মূল্যবোধ রচনা ৭০০ শব্দের মধ্যে পড়েছেন। আমরা ওয়েব সাইটে বিভিন্ন ধরনের শিক্ষামূলক আপডেট দেই। এজন্য আমাদের সাথে থাকবেন। আপনাদের যেকোন মন্তব্য আমাদের জানাবেন। আপনারাই আমাদের উৎসাহ।