ভাষা কাকে বলে: প্রত্যেকটি মানুষের ভাষা রয়েছে। যে ভাষায় আমরা কথা বলি তাকে বলা হয় মাতৃভাষা। মাতৃভাষায় কথা বলার মত আনন্দ অন্য কোন ভাষায় নেই। আজ আমরা জানবো ভাষা কাকে বলে, ভাষার বৈশিষ্ট্য, ভাষার উপাদান। এছাড়া ভাষা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।

ভাষা কাকে বলে?
বাগযন্ত্রের মাধ্যমে অর্থবোধক ধ্বনি এর সাহায্যে মনের ভাব প্রকাশ করার মাধ্যম কে ভাষা বলে।
মানুষ তার মনের ভাব অন্যের কাছে প্রকাশ করার জন্য কণ্ঠধ্বনি এবং হাত-পা-চোখ ইত্যাদি অঙ্গ প্রত্যঙ্গের মাধ্যমে ইঙ্গিত করে। কণ্ঠধ্বনি সাহায্যে মানুষ যত বেশি পরিমাণ মনের ভাব প্রকাশ করতে পারে, অন্য কোনো মাধ্যমে ততটা পারেনা। কণ্ঠধ্বনি সহায়তায় মানুষ মনের সূক্ষাতিসূক্ষ ভাবও প্রকাশ করতে পারে।
এখন জানা প্রয়োজন কণ্ঠধ্বনি বলতে কী বোঝায়?
কণ্ঠধ্বনি বলতে মুখ গব্বর, কন্ঠ, নাক ইত্যাদির সাহায্যে উচ্চারিত ধ্বনি সমষ্টিকে বোঝায়। আবার ধ্বনি সৃষ্টি হয় বাক যন্ত্রের মাধ্যমে। গলনালী, কন্ঠ, জিব্বা, তালু, দাঁত, নাক ইত্যাদি বাকপ্রত্যঙ্গ কে এক কথায় বলা হয় বাকযন্ত্র। সকল মানুষের ভাষা বাগ যন্ত্রের মাধ্যমে সৃষ্ট। তবুও একই ধ্বনি বা ধ্বনি সমষ্টির অর্থ বিভিন্ন মানবগোষ্ঠীর ক্ষেত্রে বিভিন্ন রকম হতে পারে। এ কারণে বিভিন্ন মানবগোষ্ঠীর জন্য আলাদা আলাদা ভাষায় সৃষ্টি হয়েছে। তাহলে যদি আমরা আরো ভালোভাবে জানতে চাই,
ভাষা কাকে বলে?
মানুষের কন্ঠনিঃসৃত বাক সংকেতের সংগঠনকে ভাষা বলা হয়। অর্থাৎ বাক যন্ত্রের মাধ্যমে সৃষ্ট অর্থবোধক ধ্বনি সংকেত এর সাহায্যে মানুষের মনের ভাব প্রকাশের মাধ্যম হল ভাষা।
দেশ, কাল এবং পরিবেশ ভেদে ভাষার পার্থক্য ও পরিবর্তন ঘটে। বিভিন্ন প্রাকৃতিক পরিবেশে অবস্থান করে মানুষ মনোভাব প্রকাশের জন্য বিভিন্ন বস্তু এবং ভাবের জন্য বিভিন্ন ধরনের সাহায্যে শব্দ সৃষ্টি করে। এসব শব্দ মূলত নির্দিষ্ট পরিবেশে মানুষের বস্তু এবং ভাবের প্রতীক। এজন্যই আমরা বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন রকমের ভাষা দেখতে পাই। বর্তমানে আমরা যে ভাষা ব্যবহার করি হাজার বছর আগে এই ভাষা এমন ছিলনা। অর্থাৎ কালের পরিবর্তনে ভাষার পরিবর্তন ঘটে। বর্তমানে পৃথিবীতে সাড়ে তিন হাজারের বেশি ভাষা প্রচলিত আছে। তার মধ্যে বাংলা ভাষায একটি। ভাষাভাষী জনসংখ্যার দিক দিয়ে বাংলা পৃথিবীর চতুর্থ বৃহত্তম ভাষা। বাংলা দেশের অধিবাসীদের মাতৃভাষা বাংলা। বাংলাদেশ ছাড়াও পশ্চিমবঙ্গের জনসাধারণ এবং ত্রিপুরা, বিহার, উড়িষ্যা এবং আসামের কয়েকটি অঞ্চলের মানুষের ভাষা বাংলা। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ বিশ্বের অনেক দেশে বাংলা ভাষাভাষী জনগণ রয়েছে। বর্তমানে পৃথিবীতে প্রায় 30 কোটি লোকের মুখের ভাষা বাংলা ভাষা।
ভাষা কাকে বলে এর পাশাপাশি আরও পড়ুন:
ভাষার প্রকারভেদ
বাংলা ভাষা মূলত দুই প্রকার।
- লৈখিক এবং
- মৌখিক
লৈখিক আবার দুই প্রকার।
- সাধু ও
- চলিত
ভাষার বৈশিষ্ট্য:

১. যেখানেই মানুষ আছে, সেখানেই ভাষা আছে।
২. সব ভাষাই সমান জটিল এবং যেকোন মনোভাব প্রকাশে সমভাবে সক্ষম।
৩. যেকোন ভাষার শব্দভাণ্ডারকে নতুন ধারণা প্রকাশের সুবিধার্থে নতুন শব্দ যোগ করা যায়।
৪. সব ভাষাই সময়ের সাথে পরিবর্তিত হয়।
৫. সব ভাষাতেই কতগুলি সসীম সংখ্যক ধ্বনি থাকে। যেগুলি জোড়া লাগিয়ে অর্থপূর্ণ শব্দ তৈরি করা হয়।
৬. সব ভাষার শব্দ ও বাক্যগঠনের প্রক্রিয়া প্রায় একই ধরনের।
৭. প্রতিটি কথ্য ভাষার বিচ্ছিন্ন ধ্বনি-একক আছে। কথ্য ভাষায় স্বরধ্বনি ও ব্যঞ্জনধ্বনি আছে।
৮. সব ভাষাতেই ব্যাকরণিক পদশ্রেণী যেমন বিশেষ্য, ক্রিয়া, ইত্যাদি আছে।
৯. সব ভাষাতেই না-বাচকতা, প্রশ্ন করা, আদেশ দেওয়া, অতীত বা ভবিষ্যত নির্দেশ করা, ইত্যাদি আছে।
১০. যেকোন স্বাভাবিক মানব শিশু পৃথিবীর যেকোন ভৌগোলিক, সামাজিক, জাতিগত বা অর্থনৈতিক পরিবেশে যেকোন ভাষা শিখতে সক্ষম।
আশা করি আমরা আজকের এই পোস্টের মাধ্যমে ভাষা কাকে বলে এবং ভাষার উপাদান সমূহ জানতে পেরেছি। এছাড়া জানতে পেরেছি ভাষার বৈশিষ্ট্য। ভাষা সম্পর্কে আপনাদের যাবতীয় প্রশ্ন আমাদের করতে পারেন। এছাড়া আপনারা কি ধরনের লেখা পেতে চান তা আমাদের জানাতে পারেন।