খেজুরের গুনাগুন হয়তো বলে শেষ করা যাবে না। খেজুর খাওয়ার উপকারিতা অনেক। এমনকি পবিত্র কুরআনে খেজুর খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বলা হয়েছে। আমরা যে সকল খেজুর থেকে প্রচুর পরিমাণে শক্তি পেতে পারি তা হচ্ছে, আজওয়া খেজুর, খেজুর রস, খুরমা খেজুর, মরিয়ম খেজুর ইত্যাদি। আজ আমরা খেজুরের গুনাগুন সম্পর্কে বিস্তারিত জানব।

খেজুর সম্পর্কিত কিছু তথ্য:
খেজুরের আরবি নাম: নাখইল
বাংলা নাম: খেজুর
খেজুরের ইংরেজি নাম: Date
খেজুরের বৈজ্ঞানিক নাম : Phoenix dactylifera
খেজুরের ঔষধি গুনাগুন:
শুক্র স্বল্পতা, স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি, ত্বকের কোমলতা বৃদ্ধি, হৃদরোগে, ফুসফুসের জটিলতায়, কামোদ্দীপক
মহা পবিত্র কুরআন শরীফে খেজুরের বর্ণনা:
ইসলাম ধর্মে খেজুরকে অন্যান্য সকল ফল থেকে আলাদা ভাবে মূল্যায়ন করা হয়েছে। পবিত্র কোরআন শরীফে খেজুরের নাম 20 বার উল্লেখ করা হয়েছে। পবিত্র কুরআনের সূরা মরিয়ম আয়াত নং 25 বলা হয়েছে, ”আর তুমি নিজের দিকে খেজুর গাছের কান্ডে নাড়া দাও। তা থেকে তোমার উপর সুপক্ক খেজুর পতিত হবে”। খেজুরে রয়েছে দারুণ ঔষধি গুনাগুন।
খেজুর সম্পর্কে আজ আমরা যে সকল বিষয় জানব তা হচ্ছে:
খেজুর খাওয়ার নিয়ম,
আজওয়া খেজুর ,
মরিয়ম খেজুর,
মরিয়ম খেজুর দাম ,
খেজুর খাওয়ার উপকারিতা,
খালি পেটে খেজুর খাওয়ার উপকারিতা,
শুকনা খেজুর খাওয়ার নিয়ম,
খেজুর খাওয়ার উপকারিতা এবং অপকারিতা,
আজওয়া খেজুর খাওয়ার নিয়ম,
খুরমা খেজুর,
খেজুর রস ইত্যাদি
খেজুর খাওয়ার উপকারিতা ও খেজুর খাওয়ার নিয়ম:
১. শুক্র স্বল্পতায় আক্রান্ত রোগীরা অন্তত চার মাস প্রতিদিন 10 থেকে ২০াট খেজুর মধুসহ খেলে নিঃসন্তান দমপত্তির সন্তান লাভের সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়।
২. আদা সহ খেজুর মানসিক সমস্যা উপশমকারী ও মনকে প্রফুল্ল রাখে।
৩. মধু ও আধা শহর খেজুর খেলে স্মৃতিশক্তি বেড়ে যায়।
৪. কাঁচা হলুদ ও আদার সহ খেজুর খেলে ত্বকের কোমলতা ও উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায়। এছাড়াও শরীরের ক্ষতিকারক ভাইরাস ধ্বংস করে।
৫. খেজুর ও রসুন একসাথে খেলে হৃদপিন্ডের উদ্দীপনা বাড়ে এবং হূদরোগ হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়।
৬. কালোজিরা সহ খেজুর ও গরম চা ( দুধ-চিনি ছাড়া) খেলে ফুসফুস এর জটিলতা দূর হয়।
৭. জয়তুন সহ খেজুর খেলে মূত্রবর্ধক কামোদ্দীপক এবং উত্তম জোলাপ হিসেবে কাজ করে।
৮. খেজুর মধু ও কালোজিরার তেল একসাথে খেলে শারীরিক শক্তি বৃদ্ধি পায় এবং তা যথেষ্ট পুষ্টিকর।
৯.খেজুর বিচিসহ একসাথে খেলে হার্টের ব্লক ভালো হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
১০. শুকনো খেজুর চূর্ণ, মধু ও কালোজিরার তেল দিয়ে বানানো হালুয়া আপনার দৃষ্টিশক্তি, যৌন শক্তি ও স্নায়ু শক্তি বৃদ্ধি করবে।
১১. খেজুর মধু কালোজিরার তেল ও জয়তুন তেল একত্রে পাঁচ মাস খেলে গর্ভ বতী
নারীদের প্রসব বেদনা থাকে না। শিশুর গায়ের রং ভালো থাকে।
১২. শিশুর পুষ্টিকর ও আঁশসমৃদ্ধ। জয়তুন তেলের সাথে মিশিয়ে খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য ও পরিপাকতন্ত্রের সমস্যা দূর হয়।
এছাড়াও খেজুরের রয়েছে নানা রকম উপকারিতা। আমরা একই সাথে খেজুর খাওয়ার নিয়ম ও খেজুর খাওয়ার উপকারিতা জেনে গেলাম। অনেকেই জানেনা খেজুর খাওয়ার নিয়ম কেমন হওয়া উচিত। আশা করা যায় তাদের জন্য এই লেখা টি গুরুত্বপূর্ণ হবে।
আজওয়া খেজুর:
আসলেই সকল খেজুর পুষ্টিকর। তার মধ্যে কিছু কিছু রয়েছে বেশি পুষ্টিকর। যেমন আজওয়া খেজুর। আজওয়া খেজুর সম্পর্কে আল হাদিসে বলা হয়েছে,
”যে ব্যক্তি প্রতিদিন সকালে সাতটি আজওয়া খেজুর খাবে সেদিন তিনি সক্রিয় জাদু থেকে মুক্তি পাবেন”।
অর্থাৎ একটি হাদীসের মাধ্যমে আমরা আজওয়া খেজুরের গুনাগুন এবং আজওয়া খেজুর খাওয়ার নিয়ম জেনে গেলাম। আশাকরি আজওয়া খেজুর কিভাবে খেতে হবে আপনারা বুঝে গিয়েছেন। প্রতিদিন সকালে সাতটি করে খেলে ভালো হয়। এছাড়া উপরে বর্ণিত নিয়মেও আপনারা খেলে সমস্যা হবে না।
খেজুর খাওয়ার আরো কিছু উপকারিতা এবং ডস থেরাপি:
খেজুরের ছড়া মানুষের কাধ সাদৃশ্য। খেজুরের বীজ মেরুদন্ড, কিডনি সাদৃশ্য। উক্ত অঙ্গসমূহের দুর্বলতা নিরসনে খেজুর অত্যন্ত কার্যকর ভূমিকা রাখে। কাধ ও মেরুদণ্ডের ব্যথা নিরসনে ভূমিকা রাখে।
মরিয়ম খেজুর দাম:
অনেকেই মরিয়ম খেজুর এর দাম জিজ্ঞাসা করে থাকেন। অনেকেই মরিয়ম খেজুর দাম জানেন না। এজন্য প্রতারণার শিকার হতে পারেন। তাদের জন্য আজ মরিয়ম খেজুর দাম বলে দিব। তবে একটি কথা হচ্ছে বিভিন্ন সময়ে দাম বিভিন্ন হতে পারে। আমরা যখন এই লেখাটি লিখছি, তখন যে দাম আছে হয়তো কিছুদিন পরে দাম আরো বাড়তে পারে কিংবা কমতে পারে।
তবে বর্তমানে মরিয়ম খেজুর এর দাম কেজিপ্রতি 400 থেকে 510 টাকা।
খুরমা খেজুর:
খেজুর যখন পেকে, যায় তখন তাকে আমরা খুরমা খেজুর বলি। খুরমা খেজুর খাওয়ার উপকারিতা রয়েছে। আমরা খেজুরের উপকারিতা উপরে যা জেনেছি, খুরমা খেজুর ঠিক এমনই উপকার রয়েছে। কেউ কেউ বলে থাকেন খুরমা খেজুরের উপকার বেশি।
খুরমা খেজুর এর দাম কেজিপ্রতি ২০০থেকে ২৫০ টাকা। কিন্তু এই দাম কমতে পারে বা বাড়তে পারে।
খেজুরের রস:
খেজুর রস হল খেজুর গাছ থেকে সংগ্রহকৃত রস। সাধারণত গ্রাম্য এলাকায় কিংবা যেখানে খেজুর গাছ রয়েছে সেখানে আমরা খেজুর রস দেখতে পারি। কিন্তু শহর এলাকায় খেজুরগাছ কম থাকায়, আমরা সেখানে খেজুর রস দেখতে পাইনা বা অনেকেই চিনি না। সাধারণত মাটির হাড়ি দিয়ে খেজুরের রস সংগ্রহ করা হয়। তবে বর্তমানে কিছু কিছু ক্ষেত্রে প্লাস্টিক দিয়ে সংগ্রহ করা হয়। খেজুরের রস দিয়ে ফিরনি, পায়েস এবং বিভিন্ন পিঠা যেমন মুড়ি, চিড়া, হরেক রকমের চিতুই পিঠা তৈরি করা যায়। খেজুরের রস পান করলে শরীরের দুর্বলতা ও ক্লান্তি দূরীভূত হয় এবং এতে অন্যান্য প্রাকৃতিক উপাদান রয়েছে, যা আপনাকে ক্লান্তিহীন করবে। তবে অতিরিক্ত পান করলে স্বাস্থ্যহানি ঘটতে পারে।
খেজুর রস থেকে তৈরি জনপ্রিয় খাদ্য
পাম চিনি,
পিঠা,
খেজুরের গুড়,
রসগোল্লা
আমরা আশা করি, আজকের এই লেখা পড়ার মাধ্যমে আপনারা খেজুর খাওয়ার নিয়ম, আজওয়া খেজুর, মরিয়ম খেজুর, মরিয়ম খেজুর দাম, খেজুর খাওয়ার উপকারিতা, আজওয়া খেজুর খাওয়ার নিয়ম, খেজুর রস ইত্যাদি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। আমাদের পরবর্তী লেখা পড়তে চাইলে আমাদের সাথেই থাকুন ধন্যবাদ।
This video will help you.
3 thoughts on “খেজুর সম্পর্কিত সকল তথ্য একসাথে- খেজুর খাওয়ার উপকারিতা ও নিয়ম”